Wellcome to National Portal

Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ৯ মে ২০১৭

রূপপুর নিয়ে গোয়েবলসীয় প্রচারণা

রুশো তাহের

বাংলাদেশ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুতকেন্দ্র স্থাপনের মধ্য দিয়ে পারমাণবিক বিদ্যুত উৎপাদন ও ব্যবহারের যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। এটি বাঙালীর একটি স্বপ্নের বাস্তবায়ন। যার জন্য এই জাতিকে পঞ্চাশ বছরব্যাপী অপেক্ষার প্রহর গুনতে হয়েছে। কিন্তু এটি সম্ভব হয়েছে জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্নদর্শী নেতৃত্বের বদৌলতে। আয়তনে ক্ষুদ্র বাংলাদেশ অতি ঘনবসতিপূর্ণ, আপাতদৃষ্টিতে নিউক্লিয়ার প্রযুক্তি ও রি-এ্যাক্টর পরিচালনায় দক্ষ জনবলের অভাব সত্ত্বেও পারমাণবিক বিদ্যুতকেন্দ্র স্থাপনের মতো সিদ্ধান্তের দ্রুত বাস্তবায়ন সত্যিই এক দুঃসাহসিক কাজ। অবশ্যই বলতে হবে এ ধরনের কাজ শেখ হাসিনাই করতে পারেন। কিন্তু শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ পারমাণবিক বিদ্যুত উৎপাদন ও ব্যবহারের যুগে পদার্পণ সহজসাধ্য ও ষড়যন্ত্রমুক্ত কিনা, তা-ই দেখা যাক।

প্রথমত. মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কোন দেশকে সাধারণত পশ্চিমারাসহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক প্রযুক্তিতে বেশি বাড়তে দিতে চায় না। তাদের আশঙ্কা, যদি না এরা পারমাণবিক বোমা বানিয়ে ফেলে। কিন্তু পাকিস্তানের ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই নীতি রহস্যময় কারণে বলবৎ নয়। বোধ হয় সন্ত্রাসবাদের বীজতলা পাকিস্তান পারমাণবিক বোমার মালিক হওয়াতে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য সুবিধাই হয়েছে। দ্বিতীয়ত. স্যেলার বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধকালীন বন্ধুরাষ্ট্র সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন, আজকের রুশ ফেডারেশনের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় পারমাণবিক বিদ্যুত উৎপাদনের যুগে প্রবেশ করুক তা দেশী-বিদেশী অনেক মহলেরই কাম্য নয়। তৃতীয়ত. শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ ও পরবর্তীতে উন্নত সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হোক তা ঠেকানো দেশীয় ও আন্তর্জাতিক কুশীলবদের গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। এর অংশ হিসেবে তারা চাচ্ছে না খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের মতো বাংলাদেশ বিদ্যুত খাতেও এগিয়ে যাক। তাই বিদ্যুত উৎপাদনের যে কোন পরিকল্পনার বাস্তবায়নে নানা অজুহাতকে বেছে নেয়া হচ্ছে। আর এক্ষেত্রে আসল নায়করা আড়ালে থেকে কিছু সংখ্যক বুদ্ধিজীবী, পরিবেশবাদী (যাদের অনেকে হয়ত বিষয়টি পুরোপুরি অনুধাবন না করে ষড়যন্ত্রকারীদের ফাঁদে পা দিয়েছে) ও বিশেষ পছন্দের গণমাধ্যমকে বেছে নিয়েছে। যেমন একটি জাতীয় পত্রিকা প্রায় নিয়মিতভাবে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুতকেন্দ্র নিয়ে তাদের তৈরি করা সংবাদ পরিবেশন করে আসছে। যেখানে অন্য কোন পত্রিকায় এ ধরনের প্রতিবেদন প্রকাশ নেই বললেই চলে। আমি বিশেষ ওই পত্রিকাটিতে প্রকাশিত কিছু প্রতিবেদন তুলে ধরছি : ‘তেজস্ক্রিয় বর্জ্য ফেরত নেবে না রাশিয়া’; ‘রাশিয়ার বর্তমান অবস্থান হচ্ছে তেজস্ক্রিয় জ্বালানি বর্জ্য পরিবহনযোগ্য হওয়ার পর রাশিয়া তা নিয়ে রি-সাইকেল করবে। এরপর তা বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে এবং তারপর থেকে তা বাংলাদেশকেই সংরক্ষণ করতে হবে’; ‘তেজস্ক্রিয় বর্জ্য নিয়ে সরকার উদ্বিগ্ন’; ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত প্রকল্পের ব্যয় বাড়ছে’; ‘স্পেন্ট ফুয়েল নেবে রাশিয়া, বর্জ্য ফেরত নেয়া অনিশ্চিত’। এদিকে ডিসেম্বর ১৫, ২০১৬ ওই পত্রিকাটি ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত প্রকল্প : স্বপ্ন ও বাস্তবতা’ শীর্ষক এক আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ছবিতে উপস্থিতির সংখ্যা দেখলাম মাত্র চারজন। যাহোক, চারজনের বিশাল (!) ওই আলোচনা অনুষ্ঠানের জনৈক বিশেষজ্ঞ, যিনি আমেরিকার একাধিক পারমাণবিক বিদ্যুতকেন্দ্রে নাকি ৩০ বছর কাজ করেছেন; তিনি নতুন এক তথ্য উপস্থাপন করলেন। তথ্যটি হলো, ‘পারমাণবিক বিদ্যুতকেন্দ্রের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশ হিমশিম খাচ্ছে।’ আমার প্রশ্ন হলো, পারমাণবিক বর্জ্য নিয়ে হিমশিম খাওয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের ৯৯টি রি-এ্যাক্টর বন্ধ করে না দিয়ে সেখান থেকে পৃথিবীর মোট পারমাণবিক বিদ্যুতের ৩৩ শতাংশ উৎপাদন করছে কেন? উনিইবা কেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে পারমাণবিক বিদ্যুতকেন্দ্র বন্ধের জন্য নসিহত করেননি? এটা কি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মোটা বেতনের চাকরি হারানোর ভয়ে? বস্তুত বারবার প্রচার করে স্পেন্ট নিউক্লিয়ার ফুয়েল ভীতি মানুষের মধ্যে বদ্ধমূল করার জন্যই এ ধরনের নানা মাত্রার আয়োজনÑ যা বিশেষ এ্যাসাইনমেন্ট বাস্তবায়নেরই অংশ। কিন্তু রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুতকেন্দ্রে ব্যবহৃত নিউক্লিয়ার ফুয়েল রাশান ফেডারেশন ফেরত  নেয়ার বিষয়ে উভয় দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত ইন্টার গবর্নমেন্টাল এগ্রিমেন্টে (আইজিএ) স্পষ্ট উল্লেখ আছে। আরও উল্লেখ আছে, উভয় সরকার কোন কারণে আইজিএ বাতিল করলেও রাশান ফেডারেশন কর্তৃক স্পেন্ট নিউক্লিয়ার ফুয়েল রাশিয়া ফেরত নেয়া সংক্রান্ত বিধানটি আজীবন বলবৎ থাকবে। এই তথ্যটি ওই মিডিয়া বিশারদরা জানে না তা কিন্তু বলা যাবে না। কিন্তু দেশের আপামর জনসাধারণ, এমনকি অনেক বুদ্ধিজীবীও হয়ত ভালভাবে জানেন না কিংবা আইজিএর ব্যাখ্যা তাদের কাছে স্পষ্ট নয়। এই সুযোগই কাজে লাগাতে পারে প্রচার সংখ্যায় শীর্ষের কোন মিডিয়া। হচ্ছেও তাই। প্রশ্ন আসতে পারে তারা কতটা সফল? আসলে তাদের সফলতা মোটেই উপেক্ষারযোগ্য নয়। এর কয়েকটি প্রমাণ দিচ্ছি : প্রাইভেট টিভি চ্যানেলের পরিচালক পর্যায়ের জনৈক সংবাদকর্মী কোন ভূমিকা ছাড়াই বললেন, রূপপুরের মাধ্যমে আমরা বিপদ ডেকে আনছি না তো? সিভিল সার্ভিস বিভাগের এক কর্মকর্তা আক্ষেপের সুরে বললেন, শেষ পর্যন্ত আপনারা রূপপুর প্রতিষ্ঠা করবেনই। রাশিয়া তো বর্জ্য ফেরত নেবে না। আলাপচারিতায় আরও জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও এ বিষয়ে বিভ্রান্ত। শুধু তা-ই নয়, দেশের শীর্ষ দশ বুদ্ধিজীবীও এই ইস্যুতে রূপপুর চুক্তি বাতিলের দাবি জানিয়ে পত্রিকায় বিবৃতি দিয়েছেন। যদিও তারা কেউই নিউক্লিয়ার বিশেষজ্ঞ নন। বিশেষত স্পেন্ট নিউক্লিয়ার ফুয়েল রাশিয়া ফেরত নেবে না- এই ইস্যুটি বারবার সংবাদ শিরোনাম করে প্রকারান্তরে এ্যাডলফ হিটলারের প্রচারমন্ত্রী গোয়েবলসের উত্তরসূরির কাজই করছেন প্রচার সংখ্যায় শীর্ষ মিডিয়ার হর্তাকর্তারা। এখন প্রশ্ন হলো কেন তারা গোয়েবলসের উত্তরসূরি হতে গেলেন? এতে কি তাদের লাভালাভের বিষয়-আশয় জড়িত? বস্তুত এর উদ্দেশ্য অনেক গভীরে প্রোথিত, যা অনুসন্ধানের দাবি রাখে। তবে সহজভাবে বললে এরকম: শেখ হাসিনার সরকারকে নানা অজুহাতে স্লো পয়জন দিয়ে অস্থিতিশীল রাখা। উন্নয়ন ও অগ্রগতির দুর্বার যাত্রাকে মন্থর, এমনকি থামিয়ে দেয়ার নীলনকশার বাস্তবায়ন করা।

প্রকাশিত: ১ জানুয়ারী ২০১৭ সংবাদত্রের নামঃ দৈনিক জনকণ্ঠ      পৃষ্টাঃ ০৫


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon